একটি বাসার ইন্টেরিয়রে রান্নাঘর একটি বিশাল ভূমিকা পালন করে। একটা সময় ছিলো যখন রান্নাঘর শুধুমাত্র রান্নার কাজেই ব্যবহ্রত হত।এখন পারিবারিক আড্ডা ,খাওয়া দাওয়া সব কিছুই চলে রান্নাঘরে। গৎবাঁধা রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে ট্রেন্ডি ও মর্ডাণ কিচেনের দিকে ঝুঁকছেন সবাই।সেই সাথে কতোটা ব্যাবহার উপযোগী করে একটি রান্নাঘর তৈরি করা যায় সেই বিষয়টি ও প্রাধান্য পাচ্ছে। একটি রান্নাঘর তৈরির আগে কি কি বিষয় প্রাধান্য দেয়া উচিত?

১. শুরুতেই মার্কেট এবং মেটারিয়ালস এনালাইসিস করুন। বর্তমান সময়ে ফেসবুক ইউটিউবে ইন্টেরিয়র রিলেটেড অনেক কন্টেন্ট, ভিডিও পাবেন।যেখান থেকে কয়েকটি দোকান, ফার্ম সিলেক্ট করতে পারেন।যেহেতু একটি ইন্টেরিয়র সারাজীবনের একটি ইনভেস্টমেন্ট তাই কোয়ালিটি নিয়ে কোনো কমপ্রমাইজ না করাই ভালো। বিশ্বস্ত সোর্সিং এ প্রফেশনাল হ্যান্ড এ কাজ করাতে চেস্টা করুন। শুধুমাত্র বাহ্যিক চাকচিক্যই মূল বিষয় নয়।চাকচিক্যের পাশাপাশি ভেতরের ব্যাবহৃত মেটারিয়ালস সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা নিয়ে নিন।মনে রাখবেন সঠিক সিদ্ধান্তের উপর আপনার রান্নাঘরের স্থায়িত্ব নির্ভর করছে।
২. বাজেট নির্ধারণ করুন।প্রতিটি কাজেই বাজেট প্ল্যান করে কাজ শুরু করা উচিত। আবার এটিও লক্ষ্য রাখতে হবে বাজেট এর কথা ভেবে নিম্নমানের মেটারিয়ালস ব্যবহার করা যাবে না।তাই সাধ এবং সাধ্যের মাঝে মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী অপশনটি বাছাই করুন।এতে করে কিচেনের ডিজাইন ও মেটারিয়ালস বাছাই করা সহজ হবে।
৩. ডিজাইনটি করুন আপনার চাহিদা মতো। রানাঘরের আকৃতি ও অবস্থান বিবেচনা করে ডিজাইন পছন্দ করুন। অবশ্য এক্সপার্ট বা ডিজাইনার এগুলো মাথায় রেখেই ডিজাইন করে থাকেন।তারপরও নিজের মনের অভিব্যাক্তি, পছন্দ, অপছন্দ শেয়ার করুন এতে করে ডিজাইন করতে সুবিধা হবে এবং আপনিও আপনার চাহিদা ও মনের মতো কিচেনটি পেয়ে যাবেন।
৪. রান্নাঘরটি হতে হবে খোলামেলা আর আলো বাতাসে পর্যাপ্ত। দিনের অর্ধেক সময় যেখানে কাটিয়ে দেন একজন গৃহিনী সেই জায়গাটা হতে হবে খোলামেলা ও আলো বাতাসে ভরপুর।যেহেতু শহরের প্রায় অধিকাংশ রান্নাঘর গুলোই ছোট আকৃতির তাই বর্তমানে ওপেন কিচেন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ওপেন কিচেনের বৈশিষ্ট হচ্ছে এটি ডাইনিং ও কিচেনের মাঝের দেয়াল না রেখে বিশেষ ভাবে তৈরি করা হয়। তাছাড়াও বর্তমানে মডিওলার সব কিচেনের উদ্দেশ্যই থাকে অল্প জায়গায় কি করে স্টোরেজ ক্যাপাসিটি বাড়িয়ে রান্নাঘরটি পরিপাটি ও সর্বোচ্চ ব্যাবহার উপযোগী করে গড়ে তোলা যায় সেইদিকে।ওপেন কিচেন ছাড়াও L, U,G, Island, Galley বিভিন্ন প্যাটার্নের রান্নাঘর বেশ জনপ্রিয়।
৫. রান্নাঘর এ হালকা রঙ এর ব্যাবহার রান্নাঘরকে বড় দেখাতে সাহায্য করে। তাই সলিড কালার বা হালকা রঙ বাছাই করুন।
৬. বর্তমান কিচেনগুলোতে স্লাব এর ব্যাবহার একদম ই কমে গেছে। স্লাব ব্যাবহারে কিচেনের ভেতরের জায়গা কমে এক্সেসরিজ ব্যাবহারের অনুপযোগী হয়ে যায়। বাহিরের দেশ গুলোতেও কিচেনে স্লাব এর পরিবর্তে কাউন্টার মার্বেল টপ ব্যাবহার করা হয়।তাই রান্নাঘরের কাজ শুরুর আগেই স্লাব পরিহার করুন।এতে আপনার কিচেন দেখতে বেশ স্ট্যান্ডার্ড ও কার্যকরী হয়ে উঠবে


৭. নতুন ফ্ল্যাট এর ক্ষেত্রে টাইলস লাগানোর আগেই ইন্টেরিয়র এর প্ল্যান করে ফেলুন।কারন রান্নাঘরের ইলেকট্রনিক লাইনগুলো টাইলস লাগানোর আগে করে নিলে পরবর্তীতে টাইলস ভাংচুর করার সমস্যা সৃষ্টি হয় না।
৮. কিচেন কেবিনেট তৈরির আগেই কি কি এক্সেসরিস ব্যাবহার করবেন তা নির্ধারণ করা ভালো। এতে করে এক্সেসরিস ব্যাবহার উপযোগী করে কেবিনেটটি তৈরি করা সহজ হবে।
৯.সব মিলিয়ে রান্নাঘরটি সিম্পল রাখার চেস্টা করুন। তাহলে রান্নার সময় হাতের কাছে সহজেই সব কিছু খুঁজে পাওয়া সহজ হবে।আর রান্না হয়ে উঠবে আরও সহজ ও মজাদার।